প্রকাশিত: Tue, Jul 25, 2023 12:29 PM
আপডেট: Tue, Jul 1, 2025 1:18 AM

[১]জাতিসংঘের খাদ্য ব্যবস্থাপনা সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর ৫ প্রস্তাব [২]সম্মিলিত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন সম্ভব

সালেহ্ বিপ্লব: [৩] ইতালির রাজধানী রোমে সোমবার বিকেলে শুরু হয়েছে তিনদিনব্যাপী ইউএনএফএসএস+২ শীর্ষক এই সম্মেলন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

[৪] তিনি খাদ্য চাহিদা পূরণ ও শস্যের বহুমুখীকরণে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের বিভিন্ন উদ্ভাবনের কথা তুলে ধরে বলেন, আমাদের সরকার ১৯৯৬ সালে নির্বাচিত হয়ে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করাকে প্রধান অগ্রাধিকার হিসেবে চিহ্নিত করে। তখন দেশে খাদ্য ঘাটতি ছিল প্রায় ৪০ লাখ মেট্রিক টন। পরবর্তী পাঁচ বছরে আমরা দেশকে খাদ্যশস্যে আত্মনির্ভর করে তুলি। ক্ষুধার বিরুদ্ধে আন্দোলনের স্বীকৃতিস্বরূপ আমি এফএও’র সেরেস’ পদকে ভূষিত হই 

[৫] তিনি বলেন, আধুনিক পদ্ধতির প্রচলন এবং স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্মতভাবে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমাদের চাষীগণ যথেষ্ট বিচক্ষণতার পরিচয় দিচ্ছেন। আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশের তরুণ সমাজ কৃষিক্ষেত্রে যুক্ত হয়ে ‘স্মার্ট কৃষি’ বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে এসেছে।

[৬] প্রধানমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিকভাবে ৬৯০ মিলিয়ন মানুষ এখনও অপুষ্টিতে ভুগছে। প্রায় ২ বিলিয়ন মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নেই এবং প্রায় ৩ বিলিয়ন মানুষ সুষম খাবার থেকে বঞ্চিত। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা-নিষেধাজ্ঞার ফলে সৃষ্ট খাদ্য, সার, জ্বালানি ও আর্থিক সংকট বিশ্বজুড়ে ক্ষুধা ও অপুষ্টির সমস্যাকে ঘনীভূত করেছে। তবে, পুষ্টিকর খাবার সংগ্রহের অক্ষমতার জন্য কৃষি ও খাদ্যপণ্যের মূল্য একমাত্র প্রতিবন্ধকতা নয়। এজন্য প্রয়োজন সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই খাদ্য ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন।

[৭] তিনি বলেন, এ প্রেক্ষাপটে বিশ্বব্যাপী টেকসই, নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আমি পাঁচটি প্রস্তাবনা পেশ করতে চাই। 

প্রথমত, আধুনিক কৃষিতে বিনিয়োগের জন্য বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংক এবং বেসরকারি উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আর্থিক প্রণোদনা ও নীতি সহায়তা প্রদান করা প্রয়োজন। 

[৮] দ্বিতীয়ত, জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্যোগে কৃষ্ণসাগর শস্যচুক্তি চালু রাখার পাশাপাশি খাদ্য ও সার রপ্তানির বিধি-নিষেধগুলো তুলে নেওয়াসহ যে কোন বাণিজ্য বাঁধা অপসারণের লক্ষ্যে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া একান্ত দরকার।

[৯] তৃতীয়ত, জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিক ‘ফুড ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থার রূপান্তরের লক্ষ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সহায়তায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে।

[১০] চতুর্থত, কৃষিশিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে তাল রেখে ন্যানো-প্রযুক্তি, বায়ো-ইনফরমেটিক্স ও অত্যাধুনিক কৃষি প্রযুক্তিগুলো সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া বাঞ্ছনীয়।

[১১] পঞ্চমত, প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে উৎপাদিত খাদ্যের প্রায় এক- তৃতীয়াংশের অপচয় রোধে তরুণ সমাজকে অন্তর্ভুক্ত করার মধ্য দিয়ে ব্যাপক সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা জরুরি । সম্পাদনা: এল আর বাদল